ভাগের মানুষের তৃতীয় প্রদর্শনী
মিনি অডিটোরিয়াম
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
সিলেট
গত ১২ই মে ২০১৪ , নবীন বরন ও সাংগঠনিক সপ্তাহ উপলক্ষে শাবিপ্রবির মিনি অডিটোরিয়াম -এ প্রদর্শিত হয় থিয়েটার সাস্টের ২২তম প্রযোজনা নাটক ভাগের মানুষের তৃতীয় প্রদর্শনী ।নাটকটি রচনা করেছেন মান্নান হীরা, নির্দেশনা দিয়েছেন এ কে এম আতিকুর রহমান এবং পুনঃনির্দেশনা দিয়েছেন মোঃ মোরসালিন পলাশ। নাটকটির সহ নির্দেশনায় ছিলেন আব্দুল আজিজ রিয়াদ।
ভাগের মানুষের কাহিনী সংক্ষেপঃ ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের ২-৩ বছর পর “লাহোর পাগলা গারদ” এর পাগলরা তখনও তাদের মনে বয়ে বেড়াচ্ছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকাময় স্মৃতি। হিটলার, যোসেফ স্টালিন, উইন্সটন চার্চিল, মহাত্মা গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ- এমন সব ব্যাক্তি হিসেবে নিজেকে কল্পনা করা পাগলরা নিজেদের মধ্যে তর্কে লিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন ঘটনার জন্ম দেয়। কেউবা নিজেদের লাইলি-মজনু কল্পনা করে তাদের প্রেমময় অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাতিক্রম টোবাটেক সিং। ৪৬ এর দাঙ্গায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। হঠাৎ খবর আসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পাগল বিনিময়ের, যা বিরূপ প্রভাব ফেলে সব পাগলের উপর। অন্যদিকে গারদের প্রহরী সৈন্য দ্বারা ধর্ষিত হয়ে মৃত্যুবরণ করে টিয়া নামের এক পাগল। এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে চালান দেয়ার জন্যে গারদের অসহায় ডাক্তারকে তার অস্তিত্তের হুমকি দেয়া হয়। এরই মাঝে প্রস্তুতি চলে পাগল বিনিময়ের। দেশপ্রেমী টোবাটেক সিং কে বিনিময় করার সময় সীমান্ত সেনাদের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃতদেহ পরে থাকে দুই দেশের সীমান্ত মধ্যবর্তী স্থান “নো ম্যান্স ল্যান্ড” এ, যা ঠিকানাবিহীন মানুষের ঠিকানা, যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বা রাষ্ট্র মানুষকে স্পর্শ করেনা।
নাটকটি সম্পর্কে পুনঃনির্দেশক মোঃ মোরসালিন পলাশ বলেন, নাটক নির্দেশনা দেয়া একটি অত্যন্ত দুরূহ কাজ বলেই জেনে এবং মেনে এসেছি। কিন্তু সক্রিয় নাট্যকর্মী হিসেবে নিরদেশনার প্রতি দুর্বলতাও একান্ত কম ছিল না। নির্দেশনার এ কাজটুকু যতটুকু সম্ভব সুচারুরূপে সম্পন্ন করার কোন কসরত ছাড়িনি বলেই আমার বিশ্বাস। স্বল্প জ্ঞান ও অল্প অভিজ্ঞতা কে পুঁজি করে প্রথম নির্দেশনার কাজটি করেছি বলে এতে ভুল থাকা বেশ স্বাভাবিক। যারা এ কাজে আমাকে প্রতক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করেছেন তাদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না। পর্দার সামনের ও আড়ালের সবার সহযোগিতা না পেলে কখনই নাটকটির প্রদর্শনী সম্ভব ছিল না।
নবীনদের মাঝে নাটক শেষে তৃতীয় পাগলের "কেস করে দেব" ডায়লগটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে যায় । অডিটোরিয়াম ভর্তি দর্শক দারিয়ে থেকেও নাটকটি উপভোগ করে ।