ভাগের মানুষ
রচনা
নির্দেশনা
১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের ২-৩ বছর পর “লাহোর পাগলা গারদ” এর পাগলরা তখনো তাদের মনে বয়ে বেরাচ্ছে ২য় বিশ্ব যুদ্ধের বিভীষিকাময় স্মৃতি। হিটলার, জোসেফ স্টালিন, উইন্সটন চার্চিল, মহাত্মা গান্ধি, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, এমন সব ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে কল্পনা করে পাগলরা নিজেদের মধ্যে তর্কে লিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন ঘটনার জন্ম দেয়। কেউবা নিজেদের লাইলি মজনু কল্পনা করে তাদের প্রেমময় অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাতিক্রম টোবাটেক সিং, এই পাগলা গারদের আরেক পাগল। সে ‘৪৬-এর হিন্দু মুসলমান দাঙ্গায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। হঠাৎ খবর আসে দেশের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্য রক্ষার্থে দুই দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে পাগল বিনিময় হবে, যা পাগলদের স্বাভাবিক প্রাত্যহিক জীবনে ফেলে বিরুপ প্রভাব। অন্যদিকে শাসক শ্রেণীর প্রতিভূ পাগলা গারদের প্রহরী সৈন্য কর্তৃক ধর্ষিত হয়ে মৃত্যু বরণ করে আরেক পাগল টিয়া। টিয়ার এই মৃত্যুকে আ্ত্মহত্যা বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয় শাসক শ্রেণী। এরই মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলে পাগল বিনিময়ের। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত টোবাটেক সিং এই পাগল বিনিময়ের সময় সীমান্ত সৈন্যদের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃতদেহ পড়ে থাকে দুই দেশের মধ্যবর্তী স্থান ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’, যা কিনা ঠিকানা বিহীন মানুষের ঠিকানা যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বা রাষ্ট্র মানুষকে স্পর্শ করে না।